Header Ads Widget

ফেসবুকে অপরিচিত সুন্দরী মেয়ের সাথে প্রেম করে দেখা করতে গিয়ে ৫ লক্ষ টাকা হারালো রাজশাহীর ছেলে শাহীন | সচেতন হোন সবাই

 

ফেসবুকে অপরিচিত সুন্দরী মেয়ের সাথে প্রেম করে দেখা করতে গিয়ে  ৫ লক্ষ টাকা হারালো রাজশাহীর ছেলে শাহীন | সচেতন হোন সবাই

ছেলেটির নাম শাহিন আহমেদ , শাহিনের বয়স 22 বছর । শাহিনের পারিবারিক অবস্থা ভাল তার বাবা একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ।শাহীন বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান তাই শাহীন তাদের অনেক আদরের । শাহিন রাজশাহীর একটি  কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের অনার্স এ পড়াশোনা করে । শাহিন পড়াশোনায় বেশ ভাল ছাত্র এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে । কিন্তু শাহিনের মনে একটা দুঃখ ছিল যে  তার কলেজের অনেক বন্ধুরা বান্ধবীরা তারা সবাই পড়াশোনার পাশাপাশি প্রেম করে বেড়াতো বিভিন্ন পার্কে যাই রেস্টুরেন্ট এ যাই  তো এই বিষয়গুলো নিয়ে আফসোস হতো শাহীনের । 


কারণ শাহিনের ও ইচ্ছা হতো এভাবে প্রেম করা কারো সাথে পার্কে গিয়ে ঘুরে বেড়ানো রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করা । কিন্তু শাহিনের চেহারা একটু খারাপ ছিল যার কারণে দুই একজনকে প্রেমের প্রস্তাব দিলেও সেই মেয়েগুলোর রাজি হয়নি যার কারণে শাহিনের আর প্রেম করা হয় না । শাহীনের এই আফসোস থেকেই যাবে এই আফসোস নিয়েই  শাহীন খুব ভালোভাবে পড়াশোনা করতে থাকে ।


শাহিন কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র নয়, শাহিন  শুনেছে যে অনেকেই এখন অনলাইনের মাধ্যমে মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করেছে আবার অনেকেই ফেসবুকের সম্পর্কেও থেকেই বিয়ে-শাদী পর্যন্ত করেছে । তাই শাহিন চিন্তা করল যে সরাসরি প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে তো আমার প্রেম হলো না তাহলে আমিও ফেসবুকে একটু চেষ্টা করে দেখি যদি আমার কপালে কোন প্রেমিকা জুটে যায় তাহলে তো ভালই হবে । এই ভেবে শাহীন ফেসবুকে সুন্দরী মেয়েদেরকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাতে থাকে এবং তাদের সাথে মেসেঞ্জারে কথা বলার চেষ্টা করে অনেকেই ফ্রেন্ডশিপ অ্যাকসেপ্ট করলে কেউ শাহিনের সাথে মেসেঞ্জারে কথা বলে না । এভাবে শাহীন চেষ্টা করতে থাকে  ভালো মেয়ে পেলেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়  এবং মেসেজ পাঠায় কিন্তু কেউ সাড়া দেয় না ।

 

এভাবে শাহিন ১ মাস চেষ্টা করে গেল ।ফেসবুকে হঠাৎ একদিন একটা সুন্দরী মেয়ে দেখে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালো তো সেই মেয়েটির সাথে সাথেই একসেপ্ট করল ।মেয়েটির ফেসবুক নাম ছিল রুকাইয়া জান্নাত মেয়েটির বয়স ১৮ বছর মেয়েটির বাড়ি যশোরে  । রুকাইয়া জান্নাত এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থীএবং ওই মেয়েটাই নিজ  থেকেই  শাহীনকে মেসেঞ্জারে মেসেজ করল | শাহিন এই বিষয়টা ভেবে মনে মনে অনেক খুশি হল এবং অনেক উৎসাহী হল যে একটা সুন্দরী মেয়ে শাহীনকে মেসেজ করেছে আবার বুঝি আমার  কপাল খুলে গেল হয়তো এই মেয়ের  সাথে তার প্রেম করতে পারে ।এই বলে শাহিনুর সেই মেয়েটির সাথে ম্যাসেঞ্জারে এসএমএস এ কথা বলা শুরু করলো প্রতিদিন তাদের কথা হতে থাকলো  একে অপরের ছবি বিনিময় হলো তারপর তাদের মেসেঞ্জারে কলে কথা শুরু হল তারপর তাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা শুরু হল ১৫ দিনের মধ্যে তাদের মাঝে একটা গভীর প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয়ে গেল ।


মেয়েটি তার ভালোবাসার কথার জাদুতে  ফেলে  শাহীন সম্পর্কে শাহিনের পরিবার সম্পর্কে সবকিছু জানতে চাইলো , শাহীন ও সরল বিশ্বাসে ভালোবাসার বিশ্বাসে রুকাইয়া জান্নাত কে তার সম্পর্কে তাঁর পরিবার সম্পর্কে সবকিছু বলে দিল ।


এভাবে তাদের গভীর প্রেম চলা শুরু হলো আরও ১৫ দিন কেটে গেলো অর্থাৎ তাদের প্রেমের বয়স যখন ১ মাস হয়ে গেল । একদিন শাহিন রুকাইয়া কে বলল দেখো আমাদের বন্ধু বান্ধবীরা প্রেম করে তারা তো সবাই পার্কে যায় রেস্টুরেন্টে যায় ঘুরতে যায় । কিন্তু আমরা তো  এসব কিছুই করতে পারলাম না আমাদের প্রেমের এক মাস হয়ে গেল । আমরা শুধু মোবাইলে কথা বলে যাচ্ছি আমরা কি পারি না কোথাও দেখা করতে করতে হাত হাত রেখে ঘুরতে তোমার  তোমার কোলে মাথা রেখে একটু ঘুমাতে ।


শাহিনের এমন কথা শুনে রুকাইয়া জান্নাত বলল হ্যাঁ তা তো অবশ্যই আমিও তো দেখেছি আমার বন্ধু বান্ধবেরা প্রেম করে তারাও ঘোরাফেরা করে তাদের বয় ফ্রেন্ড রা অনেক গিফট দেয় বিষয়টি খুব ভালই লাগে । কিন্তু দেখো আমরা শুধু মোবাইলে কথা বলে যাচ্ছি কারণ তুমি  তুমি রাজশাহী ছেলে আর আমি যশোরের মেয়ে আমাদের মাঝে অনেক দূরত্ব ।আমরা কি কিভাবে দেখা করব বলো আমি যদি মেয়ে না হয়ে ছেলে হতাম তাহলে আমি ঠিকই তোমার সাথে রাজশাহী গিয়ে আগে দেখা করতাম।




রুকাইয়া জান্নাতের মুখে এই  ধরনের কথা শুনে শাহিন মনে মনে খুব খুশী হলো শাহিন ভাবল রুকাইয়া জান্নাত তাকে সত্যি সত্যি ভালবাসে এবং আমার  সাথে দেখা করতে উৎসাহিত । তখন শাহিন রুকাইয়া জান্নাত কে বলল আরে পাগলি তোমাকে আসতে হবেনা আমি যাব তোমার যশোরে তোমার সাথে দেখা করতে এবং তোমাকে অনেকগুলো গিফট উপহার দিব তোমাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াবো বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর জায়গাতে ।




শাহিনের এমন কথা শোনে রুকাইয়া জান্নাত বলে  তুমি কি সত্যিই আসতে চাও তখন শাহিন বলল হ্যাঁ আমি সত্যিই তোমার সাথে দেখা করতে চাই ।তখন রুকাইয়া বলল তাহলে শোনো যশোরের এখানে তো আমার অনেক পরিচিত মানুষ আছে মামা আছে চাচা আছে খালু আছে সে ক্ষেত্রে তারা  দেখলে সমস্যা হতে পারে আমরা অন্য কোথাও গিয়ে দেখা করি ।




শাহীন বললো তাহলে কোথায় দেখা করবো আমি কোথায় যাব বলো । তুমি যেখানে বলবে আমি সেখানেই যাব তখন রুকাইয়া জান্নাত শাহীনকে বলে যে চলো আমরা কুয়াকাটা থেকে ঘুরে আসি তাহলে ওইখানে গেলে আমাদের কেউ চিনতে পারবে না আমরা ভাল থাকব নিরাপদে থাকবো এবং আমাদের সময় গুলো কেও খুব ভালোভাবে কাটাতে পারব ।



রুকাইয়া জান্নাত এর  কথা শুনে শাহিন এক কথায় রাজি হয়ে গেল । শাহিন মনে মনে ভাবলো  রুকাইয়া জান্নাত তো আমার থেকেও বেশি আগ্রহী আমাদের সম্পর্ক নিয়ে তার সাথে যদি আমি দুইদিন সময় কাটাতে পারি তাহলে আমাদের প্রেম আরো গভীর হবে আমরা আমাদের ভালোবাসার বেড়ে যাবে ।শাহিন রুকাইয়া জান্নাত কে বলল ঠিক আছে আমি পাঁচ দিন পরে কুয়াকাটা যাব আমি সবকিছু ব্যবস্থা করতেছি তুমিও প্রস্তুতি নাও । শাহিনের  রুমে বসে বসে ভাবছে যারা প্রেম করে তারা তো তাদের প্রেমিকাকে দামি উপহার দেয় মোবাইল ফোন কিনে দেয় টাকা দেয় সোনার অলঙ্কার কিনে দেয় ।তাহলে আমি কি করবো রুকাইয়া যে সুন্দর তাকে যদি একবার পটাতে পারি আর বিয়ে করতে পারি তাহলে আমার জীবন সার্থক হয়ে যাবে ।



শাহিন চিন্তা করলা রুকাইয়া কে একটা আইফোন ব্যান্ডের নতুন মডেলের একটা মোবাইল কিনে দেবে এই ভেবে শাহীন তার বাবার কাছ থেকে টাকা চাইল যেহেতু শাহীনের পরিবার অনেক ধনী এবং সচ্ছল ছিল তাই সে টাকাটা চাইতে তার বাবা দিয়ে দিল। শাহীনের  কোন আবদার তার বাবা-মা অপূর্ণ রাখেনি শাহিন যা চায় তাই পায় তো তাই শাহিনের সেই টাকা বাড়িতে থেকে  কোনো কষ্ট হলো না । শাহিন মার্কেটে গিয়ে রুকাইয়া জান্নাত এর জন্য ১ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা দিয়ে  আইফোন ব্যান্ডের নতুন মডেলের  একটি মোবাইল ফোন কিনলো এবং তার পাশাপাশি তার কাছে নগদ ৩০হাজার  টাকা নিয়ে কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে রওনা হল । 



কুয়াকাটা বাসস্ট্যান্ডে সেখানে রুকাইয়া  জান্নাতের সাথে  সরাসরি দেখা হল শাহিন এতদিন রুকাইয়া জান্নাত কে শুধু পিকচারে দেখেছে কিন্তু  রুকাইয়া জান্নাত তার থেকেও বেশি সুন্দর এক কথায় রুকাইয়া  জান্নাত কে দেখে শাহিন পুরা অবাক হয়ে গেল ফিদা হয়ে গেল । রুকাইয়া  জান্নাত এবং শাহীন তারা  পার্শ্ববর্তী একটি আবাসিক হোটেলে গিয়ে সেখানে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে রুম বুক করলো । তারপর রুকাইয়া জান্নাত কে সেই নতুন আইফোন গিফট করো উপহারটি পেয়ে রুকাইয়া  জান্নাত খুবই খুশি হলো ।তারা রুমে বসে গল্প করছিল ঠিক এরকম সময়ে তাদের দরজায় নক করলো কেউ । রুকাইয়া  জান্নাত গিয়ে দরজাটি খুলে দিল সাথে সাথে  চারজন ছেলে  রুমে ঢুকে পড়ে । 



তারপর তারা শাহিনের হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং শাহিনের কাছ থেকে শাহীনের মোবাইল এবং নগদ ৩০ হাজার  টাকা নিয়ে নেই । এরপর তারা শাহীনকে উলঙ্গ করে তার একটা ভিডিও তৈরি করে । তারপর তারা শাহীনকে বলে যে তুই এবার তোর মোবাইল  থেকে তোর  বাবার কাছে কল দিয়ে বল আমাদের ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। যদি ৫ লক্ষ টাকা দেয় তাহলে আমরা  তোকে ছেড়ে দিব । আর যদি টাকা না দেয় তাহলে আমরা কিন্তু তোকে মেরে ফেলবো আর তোর উলঙ্গ ভিডিও ভাইরাল করে দেব ।



শাহিন এবার বুঝতে পারল যে সে প্রতারণার ফাঁদে পড়েছে । কারণ যে রুকাইয়া জান্নাত কে যে বিশ্বাস করে এসেছিল সত্যিকারের ভালোবেসে ফেলেছিল মূলত রুকাইয়া  জান্নাত একটা প্রতারক চক্রের সদস্য । যার কারণে তাকে এভাবে আবাসিক হোটেলে নিয়ে এসে আটকে টাকা দাবি করা হচ্ছে । তার ৪জন ছেলেটি তার সহকারী  বন্ধু ।আমি তো ফাঁদে পড়ে গেছি এরা  টাকা না দিতে পারলে আমাকে মেরে ফেলবে ভিডিও ভাইরাল করে দেবে । তখন শাহীন তার বাবার কাছে ফোন করল এবং সব ঘটনা খুলে বললো যেহেতু শাহিনের বাবার অনেক টাকা ছিল তাই ছেলের জীবন বাঁচানোর জন্য তাদের একাউন্টে ৫লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দিল । শাহীন তার বাবাকে বলেছিল যে এটা যেন কেউ না জানে কারণ তারা বলেছিল যে শাহীনাকে উলঙ্গ করে তাদের কাছে দুই মিনিটের ভিডিও ছিল তারা বলেছিল যদি বিষয়টা পুলিশের কাছে বা অন্য কোনো কারো কাছে না বলে ,যদি বলে  সে ক্ষেত্রে ভিডিও ভাইরাল করে দিবে ।



তারা পাঁচ লক্ষ টাকা পাওয়ার পরে তারা শাহীন কোনো ক্ষতি না করে শাহীনকে সন্ধ্যাবেলায় আবাসিক হোটেল থেকে বের করে নিয়ে আসে এবং একটি গাড়িতে তুলে রাজশাহীর উদ্দেশে পাঠিয়ে দেয় । আর এই বলে ভয় দেখায় যে বিষয়টা জানো কেউ কখনো না জানে বা রুকাইয়া জান্নাত বা তার চার বন্ধু সম্পর্কে তাদের পরিচয় কোনো কিছুই যেন কেউ না জানে | যদি জানে তাহলে কিন্তু তার সেই উলঙ্গ ভিডিওটি ভাইরাল করে দিবে এই বলে শাহীনকে ভয় দেখায় |



শাহিন সেখান থেকে সরাসরি বাসায় চলে আসে এবং তার বাবা-মার কাছে যায় তার বাবা-মা শাহীনকে ফিরে পেয়ে খুব খুশি হয় এবং বলে ৫ লক্ষ টাকা গেছে যাক কিন্তু আমাদের সন্তানকে সুস্থভাবে পেয়েছি এটাই আলহামদুলিল্লাহ শাহিন মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো জীবনে আর কখনো কোন সুন্দরী মেয়ের প্রেমে পড়বো না সুন্দরী কোন মেয়ের প্রতারণায় ভুলবো না ।



বর্তমান সময়ে যেহেতু আমরা বাস্তব দুনিয়া থেকে ফেসবুকের সময় বেশি কাটায় আমরা । ফেসবুকের মাধ্যমে আমাদের দেশের অনেক তরুণ-তরুণীর প্রেম হয় ভালোবাসার সম্পর্ক সৃষ্টি করে । তবে এই প্রেম ভালোবাসার সম্পর্কে কেউ সফল হয় আবার কেউ ব্যর্থ হয় আবার অনেকের জীবন দিতে হয় আবার অনেকের অনেক টাকা নষ্ট হয় ।


এই  বিষয়টি আমাদের সাথে শেয়ার করার একটাই উদ্দেশ্য যারা এ ধরনের চিন্তাভাবনা করেন প্রেম-ভালোবাসা করার চিন্তা ভাবনা করেন তারা অবশ্যই এই বিষয়গুলো থেকে যেন সচেতন হতে পারেন সাবধান হতে পারেন এজন্য আপনাদের সাথে আর কি বিষয়টা শেয়ার করা | এই লেখাকে যদি আপনারা শিক্ষামূলক মনে করেন তাহলে অবশ্যই এখান থেকে শিক্ষা অর্জন করবেন এবং এই পোস্টটি সবার সাথে শেয়ার করে দিবেন যেন এই বিষয়গুলো দেখে আরো মানুষ সচেতন হতে পারে ।


Post a Comment

0 Comments