Header Ads Widget

পোকা ও ইঁদুর দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে মেহগনির তেল ব্যবহারে ব্যাপক সফলতা পাচ্ছেন কৃষকরা রাজশাহীর নিউজ

 

পোকা ও ইঁদুর দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে মেহগনির তেল ব্যবহারে ব্যাপক সফলতা পাচ্ছেন কৃষকরা রাজশাহীর নিউজ
                                                   সংগ্রহীত ছবি

স্টাফ রিপোর্টার:-

কৃষি জমিতে ইঁদুর এবং বিভিন্ন ধরনের পোকা মাকড়ের আক্রমণ হরহামেশাই ঘটে থাকে যার ফলে কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয় । এই ধরনের ক্ষতি সাধন থেকে মুক্তির জন্য কৃষকরা সাধারণত জমিতে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করে থাকে এই রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার অনেক ব্যয়বহুল হয়ে থাকে কৃষকদের জন্য ।সাম্প্রতিক সময়ে এই ধরনের রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যম কে বাদ দিয়ে নতুন একটি  প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কীটনাশক আবিষ্কার করেছে  নিলফামারীর স্থানীয় কৃষকরা | |


তারা রাসায়নিক কীটনাশক এর বিপরীত হিসেবে ফসলের জমিতে মেহেগুনির ফল থেকে এক ধরনের তেল তৈরি করছে এবং সেই তেল তারা জমিতে ব্যবহার করে জমি থেকে ইদুর এবং বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পোকামাকড় দমনে ব্যবহার করছে । স্থানীয় কৃষকরা বলেন নিরাপদ খাদ্য তৈরি করতে এতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে ।



স্থানীয় ভাবে কয়েকজন নারী পুরুষ বাড়ির আঙিনাতে বসে মেহগনি গাছের ফল বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গুঁড়ো করে এক ধরনের তেল তৈরি করছেন  এবং সেই তেল স্প্রে মেশিনের পানির সাথে মিশিয়ে তারা বিভিন্ন ধরনের ফসলি জমিতে ব্যবহার করছেন । এই প্রাকৃতিক পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে খাদ্যের গুণগত মান ভালো থাকছে এবং  রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারে কারণে কৃষকদের খরচের পরিমাণ বেশি হতো কিন্তু এই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে কৃষকদের উৎপাদন খরচ অনেকটাই কমে গেছে এর ফলে কৃষকরা বেশি লাভবান হবে বলে আশা করেন স্থানীয় কৃষিবিদরা ।



প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে এই ধরনের তেল থেকে প্রাকৃতিক কীটনাশক তৈরি করতে কৃষকদের স্থানীয়ভাবে সাহায্য করছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায়। তিনি বলেন যে, আমাদের দেশে খাদ্য উৎপাদন স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে ঠিকই কিন্তু নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে অনেকটাই ঘাটতি রয়েছে এখনো আমাদের দেশে । নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে জৈব এবং প্রাকৃতিক কীটনাশক ছাড়া উপায় নেই ।


সরকারের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই উপজেলার কৃষকদের রাসায়নিক কীটনাশকের বিকল্প হিসাবে এই প্রাকৃতিক মেহগনির তেল দিয়ে তৈরি কীটনাশক ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে । আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী তারা কৃষি ফসল জমিতে কাজ করছে এর ফলে তাদের কৃষিজমিতে পোকা দমনের জন্য তাদের উৎপাদন খরচ কম হচ্ছে । এতে করে কৃষকরা ব্যক্তিগত ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে লাভবান হচ্ছে এবং এই প্রাকৃতিক কীটনাশক ব্যবহারের কারণে আমরা নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে পারছি ।



পুটিমারি ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের স্বনামধন্য কৃষক আব্দুল কাইয়ুম আমাদের জানান যে,তিনি বলেন ফসলি জমিতে ক্ষতিকর পোকামাকড় এর পাশাপাশি ইঁদুর ধানের ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে তাই তারা এবার প্রথম থেকেই তাদের ধানের জমিতে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরিকৃত প্রাকৃতিক কীটনাশক ছেটানোর  কারণে তাদের জমিতে এবার ইঁদুর আক্রমন করতে পারেনি । তিনি বলেন রাসায়নিক কীটনাশক ছিটানো সময় অনেক ধরনের সর্তকতা অবলম্বন করতে হয় তা না হলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয় কিন্তু এই প্রাকৃতিক কীটনাশক ব্যবহারে কোন ধরনের সর্তকতা অবলম্বন করতে হয় না এর ফলে আমাদের স্বাস্থ্যের কোন ধরনের ক্ষতি সাধন হয় না এর ফলে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছে ।



উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জনাব হাবিবুর রহমান বলেন যে,খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পর এখন আমাদের লক্ষ্য সরকারিভাবে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করা এবং এই বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া । তারই ধারাবাহিকতায় আমরা এই ধরনের একটা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি আমরা ধীরে ধীরে এই পদ্ধতি বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব । আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে ধীরে ধীরে রাসায়নিক কীটনাশক পদ্ধতির ব্যবহার কে বাদ দিয়ে প্রাকৃতিক কীটনাশক পদ্ধতির ব্যবহার চালু করা যাই এই পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা দেশের কৃষি খাতে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হব । আমরা ধীরে ধীরে কৃষকদেরকে এই পদ্ধতিতে অভ্যস্ত করানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি নিরলসভাবে আমরা এই পদ্ধতিকে আস্তে আস্তে দেশের সব খানেই ব্যবহার করার চিন্তা ভাবনা করছি ।

Post a Comment

0 Comments