Header Ads Widget

একজন এনজিও কর্মীর না বলা কথাগুলো আজ শুনবো আমরা ,পাওয়া না পাওয়া কথা ,কষ্টের কথা

 

একজন এনজিও কর্মীর না বলা কথাগুলো আজ শুনবো আমরা ,পাওয়া না পাওয়া কথা ,কষ্টের কথা

বগুড়া প্রতিনিধি :-

আমাদের এনজিওর চাকরী একটি অন্যতম মাধ্যম | এই এনজিও গুলোর মাধ্যমে অনেক বেকার ভাইয়েরা ও বোনেরা তাদের কর্মসংস্থানের একটা মাধ্যম খুঁজে পেয়েছেন  । অনেক ভাইয়েরা এবং বোনেরা এই এনজিও প্রতিষ্ঠান চাকরি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন।


তো আজকে আমরা এনজিও প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা একজন আপুর কাছ থেকে শুনবো তার এই অভিজ্ঞতার কথা তার এনজিওতে চাকরি করার বিভিন্ন কথা তার সফলতার কথা বা তার জমানো কিছু না বলা কথা তার কষ্টের কথা সব কিছুই আমরা শুনব এই আপুর কাছ থেকে । আশাকরি সবাই আপনারা আমাদের এই সাক্ষাৎকারে বিশেষ পর্বটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন তাহলে যারা এনজিওতে চাকরি করেন বা এনজিওতে চাকরি করবেন বলে আশা করছেন তারা আরো ভালো একটা ধারণা পেয়ে যাবেন তো সবাই এই লেখাটি শেষ পর্যন্ত একবার হলেও পড়বেন ।


রাজশাহী নিউজ :- আসসালামুয়ালাইকুম আপু কেমন আছেন আপনি?


 শামসুন্নাহার সাথী :-ওয়ালাইকুম সালাম হ্যাঁ ভাইয়া ভালো আছি ,আপনারা কেমন আছেন?

রাজশাহী নিউজ :-আলহাদুলিলা আমরাও ভালো আছি ।



রাজশাহী নিউজ :- তো আপু আপনি আপনার বাস্তব জীবনের গল্পটা আপনি কিভাবে এনজিও পেশাতে আসলেন  সে বিষয়ে একটু যদি আমাদের দর্শকদের বলতেন ।


 শামসুন্নাহার সাথী :- আমার নাম শামসুন্নাহার সাথী আমার বাসা বগুড়া জেলায় আমি অনার্স পর্যন্ত লেখাপড়া কমপ্লিট করেছি মাস্টার্সে ভর্তি হওয়া হয় নাই ।আমি যখন লেখাপড়া শেষ করলাম বা অনার্সে পড়তেছিলাম তখন আমার একটা স্বপ্ন ছিল যে আমি অনার্স শেষ করে ভালো একটা সরকারি চাকরি করব ।কিন্তু যখন আমি অনার্স পাশ করলাম কয়েকটা সরকারি জবের পরীক্ষা দিলাম ।এবং বর্তমান পরিস্থিতিকে বিশ্লেষণ করলাম যে দেখলাম আসলে সরকারি চাকরি আমাদের জন্য নয় । কারন এখানে অনেক সিস্টেম বা টেকনিক অনেক মেধাবী হতে হয় অনেক ধরনের বিষয়গুলো কাজ করে । তো আমি এগুলো ভেবে আমি আর সরকারি চাকরির পিছনে দৌড়ালাম না এবং আর একটা কারন ছিল আমাদের পরিবারের অবস্থা তেমন ভালো ছিল না আমি পরিবারের বড় মেয়ে এবং আমার আরো ছোট একটা ভাই আছে এবং বোন আছে সে ক্ষেত্রে আমার দায়িত্বটা বেড়ে যায় ।


বর্তমানে চাকরির অবস্থা তো আপনারা হয়তো সবাই জানেন যে এখন চাইলেই বেসরকারি চাকরি পাওয়া যায় না মানুষের দরকার হয় রেফারেন্স এর দরকার হয় ।তো আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না তখন একজন আমাকে বলল যে বাংলাদেশে এনজিওর অনেক সার্কুলার হয় এখানে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে  । তো আমি সেই ভাইটির কথা শুনে আমিও কয়েকটি সার্কুলার সংগ্রহ করলাম এবং কয়েকটি তে আবেদন করলাম । তো বেশ কিছুদিন পরেই যাই হোক আমার একটা এনজিও কোম্পানিতে চাকরি হয়ে গেল ।


তো যখন আমার চাকরিটা হয়ে গেল আমার পরিবার থেকে আমাকে বারণ করল বলল অনেকেই বলল যে মেয়েদের জন্য এনজিও চাকরি করাটা অনেকটা কঠিন হয়ে যায় তো আমি দেখলাম আমার যদি সংসারের হাল ধরতে হয় তাহলে আমাকে এনজিওর এই চাকরিটা করতেই হবে  । কারণ আমিতো এরচেয়ে বেটা ভালো কিছু করতে পারছিনা আমাকে এটা দিয়েই শুরু করতে হবে আমি দেখলাম যে আমার আরো বোনেরা এখানে চাকরি করে তো তারা যদি পারে তাহলে আমি কেন পারব না এইমনোবলে আমি চাকরিতে জয়েন করি ।


রাজশাহী নিউজ :- তো আপু এবার তাহলে আপনার চাকরিতে জয়েন করার পর এর অভিজ্ঞতা এবং কি কি সুবিধা বা কেমন কি অসুবিধা এই বিষয়ে যদি একটু আমাদের দর্শকদের বলতেন ।


শামসুন্নাহার সাথী :- দেখেন ভাইয়া পৃথিবীতে বা আমাদের দেশে কোন কাজে কিন্তু সহজ না সবখানে পরিশ্রম করতে হয়  হয়তো কোনো ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠান কম পরিশ্রম করতে হয় আবার কোন কোন জায়গায় বেশি পরিশ্রম করতে হয় । তবে বেসরকারি জব যেগুলো সবখানে কিন্তু আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে তো আমি আমার ভাগ্যটা কে মেনে নিয়েছিলাম এবং আমি আমার কর্ম ক্ষেত্রে অনেক পরিশ্রম করেছি । কোন ক্ষেত্রে কাজের ভুল বা অনেক ক্ষেত্রেই বড়দের কাছ থেকে অনেক কথা শুনতে হয় এগুলো মেনে নিতেই হবে ।


আমি যদি আমার প্রতিষ্ঠানকে কাজের মাধ্যমে খুশি করতে পারি তাহলে কিন্তু তারাও আমার উপর খুশি হবে । সে ক্ষেত্রে অনেক কষ্ট হয় অনেক পরিশ্রম হয় অনেক কথা শুনতে হয় । বিশেষ করে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের অনেকটাই প্রবলেমে পরতে হয় এনজিওর চাকরি গুলোতে কারণ হিসেবে বলা যায় যে মাঠে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া মানুষের বাড়িতে বাড়িতে যাওয়া কিস্তি দেওয়া এবং কিস্তি সংগ্রহ করা একটা মেয়ের জন্য অনেকটাই কষ্টসাধ্য বিষয় । কিন্তু এগুলোকে মানিয়ে নিতে হবে এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যাকে সমাধান করার মনমানুষিকতা থাকতে হবে তাহলেই আপনি এই পেশাতে ভালো কিছু করতে পারবেন ।


একটা পরিবেশে যখন আপনি নতুন আসবেন তখন সেটার পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে আপনাকে একটু কষ্ট করতে হবে একটু সময় লাগবে । তো এখানেও এনজিওর চাকরীর গুলোতেও প্রথম অবস্থায় নতুনদের কাছে অনেকটাই কষ্টসাধ্য এবং কষ্টের কাজ মনে হয় । তো এই কারণে অনেকেই চাকরি ছেড়ে চলে যায় এখানে যাদের এর চেয়ে বেটার অপশন থাকে মূলত তারাই চলে যায় চাকরি ছেড়ে আর আমার মতে যাদের কোন বেটার অপশন থাকেনা তখন বাধ্য হয়েই এখানে চাকরি করতে হয় । যেমন আমি করছি অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে আজ আমি এখনো এই পেশাতে ঠিকই আছি এবং খুব ভালোই আছি ।


রাজশাহী নিউজ :-আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনি সবকিছু মানিয়ে নিয়ে এখন বর্তমানে অনেকটা ভালো আছেন তো আপনার বেতন কাঠামো কী একটু যদি আমাদের দর্শকদের বলতেন


 শামসুন্নাহার সাথী :- দেখেন আমি যে বেতনটা পাই এটা দ্বারা আমার পরিবারকে আমি খুব ভালোভাবেই হেল্প করতে পারি এটাই আমার জন্য যথেষ্ট ।আমি কত টাকা বেতন পায় এটা আমি আর আপনাদেরকে নাই বলি আমি বলবো আমি যে বেতন পাচ্ছি আলহামদুলিল্লাহ । এবং আমি যদি আরও ভালো কাজ করতে পারি আমি যদি আমার এনজিও টাকে ভালো কিছু দিতে পারি অবশ্যই আমি আশা করি আমার বেতন আরও বেশি হবে এর বেশি কিছু আমি বলতে চাচ্ছি না ।


রাজশাহী নিউজ :- তো আপু নতুন যারা জয়েন করে তাদের জন্য প্রথম অবস্থায় কি ধরনের কষ্টসাধ্য বিষয়গুলো সামনে এসে দেখা দেয় ।



 শামসুন্নাহার সাথী :- যারা নতুন এই এনজিওগুলোতে জয়েন করে তাদের প্রাথমিকভাবে যে টার্গেট গুলো দেওয়া হয় সেই টার্গেট গুলো ফিলাপ করা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়  । কারণ অনেকেরই তো এই বিষয়টা একেবারেই নতুন ধারণা থাকে না তাই প্রথম প্রথম অবস্থায় এই টার্গেট গুলো ফিলাপ করা এবং অনেকেই ফিলাপ করতে পারে না তখন বসের কাছে বিভিন্ন ধরনের ঝাড়ি ও  কথা শুনতে হয় । তখন অনেকেরই মন খারাপ হয় এবং চাকরি ছেড়ে চলে যায় ।তো যারা এসব পরিস্থিতিকে মানিয়ে নিতে পারে  তারাই কিন্তু এই কাজে  স্থায়ী হয় এবং দীর্ঘদিন এই চাকরি করতে পারে । আর যারাই করতে পারে তারাই জীবনে সফল হয় সফলতা লাভ করে । আপনি দেখলেই দেখতে পাবেন অনেক ভাই ও বোনেরা এই এনজিওতে চাকরি করছে অনেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিটা এনজিওতে অনেক অনেক মানুষের কাজ করছে  এবং এখানে চাকরি করে তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে ।


রাজশাহী নিউজ :- তো আপনি মনে হয় এখনো অবিবাহিত তো আপনি তো এখন  অনেকটাই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারছেন তো এখন বিয়ে-শাদী সম্পর্কে কি চিন্তা ভাবনা করলেন ।


 শামসুন্নাহার সাথী :-  হ্যাঁ মেয়ে হয়ে জন্মগ্রহণ করেছি বিয়ে তো করতেই হবে আর বয়সটাও তো আস্তে আস্তে বেড়ে যাচ্ছে কাজের ব্যস্ততায় পারিবারিক সাহায্য-সহযোগিতা সবমিলিয়ে বিয়েটা এখনো করা হয়নি । তবে সামনে করবো যদি মনের মত কাউকে পাই যে আমাকে বুঝবে এবং আমার কাজ গুলোকে মেনে নেবে আমার পরিবারকে মেনে নেবে এমন যদি কাউকে খুঁজে পায় তাহলে অবশ্যই বিয়ে করবো কারন বিয়ে তো করতেই হবে।


 রাজশাহী নিউজ :-  আপু আপনি অনেক ব্যস্ত মানুষ সেই ব্যস্ততার ভিড়ে আমাদের যে আপনি অনেকটা সময় দিলেন এবং আপনার মনের জমানো কথাগুলো আপনার কষ্টের কথাগুলো আপনার অভিজ্ঞতার কথা গুলো আমাদের দর্শকদের সাথে শেয়ার করলেন এজন্য আমাদের পক্ষ থেকে আপনার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ।


প্রিয় দর্শক আপনাদের যদি ভালো সারা পাই আপনারা যদি কমেন্ট করে জানান তাহলে আমরা আরো বিভিন্ন পেশার সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন মানুষদের সাথে তাদের মনের গোপন কথা অজানা কথা না বলা কথা নিয়ে আপনাদের মাঝে আবারো হাজির হবো । আমরা আর কারো যদি ব্যক্তিগত কথা থাকে বা আপনাদের কোন লেখা বা তাদের কোনো কথা আমাদের মাধ্যমে প্রকাশ করতে চান তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ করব।  



প্রিয় দর্শক আমাদের লেখাগুলো আমাদের কথাগুলো যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে আমাদের এই লেখাগুলোকে আপনারা চাইলে শেয়ার করতে পারেন আপনাদের পরিচিত জনদের সাথে আপনাদের বন্ধুদের সাথে ।



Post a Comment

0 Comments