গোয়াল কান্দি রাজবাড়ীতে গভীর রাতে সুন্দরী মেয়ে
আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া সেরা একটি ভৌতিক গল্প শেয়ার করব যা শুনলে আপনারাও ভয় আতঙ্কিত হয়ে যাবেন :
ছোটবেলা থেকে দাদা-দাদির কাছ থেকে অনেক ভূতের গল্প শুনেছি । গল্পগুলো শোনে অনেক ভয় পেতাম রাতে একা ঘুমাতে পারতাম না । কিন্তু আস্তে আস্তে যখন বড় হলাম যুবক হলাম যখন আমার বস ২৩ -২৪ বছর হয়ে গেল । তখন আর ভুতের বা জ্বিনের কোন ভয় আমার মধ্যে কাজ করতো না কারণ কখনই আমি নিজ চোখে কোন ভূত বা জীন দেখিনি বা কখনো আমাকে কেউ ভয় দেখায়নি বা আমি চোখের সামনে কাউকে দেখে ভয় পায়নি ।
একটা সময় এসে আমার মনে হল যে এ গুলো মানুষের বানানো গল্প । আসলে জ্বীন বা ভূত বলে কিছু নেই এগুলো মানুষকে ভয় দেখায় না । মানুষ শুধুমাত্র মানুষকে ভয় পাওয়ার জন্য এই ধরনের মিথ্যা গল্পগুলো বানায় ।
আমি জ্বীন বা ভূতকে ভয় না পাওয়ার কারণে অনেক গভীর রাতেও বাড়ি ফিরি । আমার বয়স যখন ২৬ বছর তখন একদিন আমি একদিন রাজশাহী শহর থেকে বাড়ি আসতে আসতে আমার তাহেরপুর বাজারে এসে রাত ১১:৩০ টা বেজে যায় । তাহেরপুর বাজারে যখন রাত এগারোটা তখন আমি ভাবলাম যে এ আর এমন কি আমি তো কোন কিছুতেই ভয় পাই না ।আমি কখনো কোন কিছু দেখিনি তাহলে তো আমার বাড়ি যেতে সমস্যা নেই ।এই বলে আমি তাহেরপুর বাজার থেকে গোলকান্দির উদ্দেশ্যে রওনা হই । তাহেরপুর ব্রিজে যখন আসলাম তখন দেখলাম গোলকান্দি যাওয়ার জন্য কোন গাড়ি নেই ।অনেক কষ্টে একটা ভ্যান গাড়ি ম্যানেজ করলাম গোয়াল কান্দি বাজারে যাওয়ার জন্য । গোয়ালকান্দি বাজারে এসে তখন বাজে রাত বারোটা। যখন ভ্যান গাড়ি থেকে নামলাম তখন দেখলাম বাজারে কোন দোকান খোলা নেই চারিদিকে নিরব কুটকুটে অন্ধকার । তখন আমি আমার হাতের মোবাইলের টর্চটা জ্বালিয়ে কাউন্সিলের পাশ দিয়ে হেটে আসা শুরু করলাম ।
বিশ্বাস করেন আমার মনে এক ফোটাও কোনো ভয় নেই আমি নির্ভয়ে হেঁটে যাচ্ছি অর্থাৎ একটা মানুষ যখন দিনের বেলা হেটে যায় কোন ভয় কাজ করে না ঠিক আমারও ওই সময় তেমনি ছিল আমি সুন্দর মনে হেঁটে যাচ্ছি কাউন্সিলের পাশ দিয়ে ।
যখন আমি গোয়ালকান্দি রাজবাড়ীর বিল্ডিং এর মাঝখান দিয়ে পার হচ্ছিলাম তখনও আমার মনে কোন ভয় কাজ করেনি । তবে এখানে বলে রাখি যে কাউন্সিলের বাইরের আলো এবং রাজবাড়ীর আশেপাশে মানুষদের বাড়ির আলোর কারণে রাজবাড়ীর এখানটা অতটা অন্ধকার ছিল না কিছুটা আলো ভাবছিল । রাজবাড়ীর মাঝখান দিয়ে এপাশে বের হওয়ার সময় আমার কেন যেন মনে হল যে একটা সুন্দরী মেয়ে দাঁড়িয়ে মোবাইলে কথা বলছে । আমি পিছন ফিরে তাকালাম দেখলাম হ্যাঁ একটা মেয়ে মোবাইলে কথা বলছে ।আমি তখন ভাবলাম যে রাত এখন বাজে বারোটা আর এখানে দাঁড়িয়ে একটা মেয়ে মোবাইলে কথা বলছে ঘটনা কি । আমি মনে মনে ভাবলাম মেয়েটা সাহস আছে এত গভীর রাতে একা একা রাজবাড়ীতে দাঁড়িয়ে প্রেমিকের সাথে মোবাইলে গল্প করছে।
দূরের আলো মেয়েটিকে খুব সুন্দর ভাবে দেখা যাচ্ছে তবু ও আমার হাতের মোবাইলের আলোটা ধরে দেখলাম মেয়েটা অনেক সুন্দরী এবং তার বডি ফিটনেস অনেক সুন্দর । আমি আর সামনে আগালাম না আমি থমকে গেলাম ভাবলাম মেয়েটার সাথে একটু কথা বলি এত সুন্দরী একটা মেয়ে গভীর রাতে একা একা একটু কথা বলে দেখি । এই চিন্তা করে আমি আবার পিছনে ফিরলাম এবং মেয়েটির দিকে যাওয়া শুরু করলাম । তখন আমি অনুভব করলাম যে আমি যাচ্ছি মেয়েটির কাছে মেয়েটি দেখি সামনে চলে যাচ্ছে হেঁটে ।আমি বললাম এ যে আপু একটু দাঁড়ান আপনার সাথে কিছু কথা ছিল । আরে আপু ভয় পাওয়ার কারণ নেই আমি ভালো ছেলে আমি আপনার সাথে শুধু কিছু কথা বলব । আমি আপনাদের পাশের গ্রামেরই ছেলে রাজশাহী থেকে আসতেছি তাই রাত হয়ে গেছে ।
এবার আমি বুঝতে পারলাম যে মেয়েটি রাজবাড়ির ভিতরে এসে ভাঙ্গা ঘর গুলোর দিকে চলে যাচ্ছে । আমি আর দুই ধাপ সামনে এলাম আসার পর আমার মনে কেমন জানি মনে হল যে মেয়েটির ভাঙ্গা ঘরের দিকে যাচ্ছে কেন এই মেয়েটির উদ্দেশ্য কি । আমি থমকে দাঁড়ালাম তখন আমার ভেতরে একটা ভয় লাগা কাজ করল ।আমার শরীর ঘামা শুরু হয়ে গেল তখন আমার মাথায় কাজ করছিল না যে এখন আমার কি করা উচিত আমি এখন কি করবো । তখন আমার হঠাৎ মনে হল যে এটা কোন সাধারণ মেয়ে নয় আমার যাওয়া উচিত নয় ।আমার এখন চলে যাওয়ার সময় এই বলে আমি পিছন দিকে ঘুরে দৌড় দিলাম ।
রাজবাড়ী থেকে কিছুদূর আসলেই কিছু বাড়িঘর রয়েছে সেখানে এসে আমি থামলাম তারপর আমি পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলাম যে আর কিছুই নেই তখন আমি কিছুটা সাহস ফিরে পেলাম । তবে এখানে একটা কথা বলে রাখি যে আমি যখন গলকান্দি রাজবাড়ীর মধ্য দিয়ে আসতেছিলাম তখন আমি সিগারেট খেতে খেতে আসছিলাম ।
দাদা নানাদের কাছে থেকে যে গল্পগুলোর শোনতাম যে যদি কোন মানুষের হাতে আগুন বা লোহার কোন অস্ত্র বা মাছ ধরার তরে জাল থাকে তাহলে নাকি জিন বা ভুত কাছে আসে না ।তখন আমি বিষয়টা অনুভব করলাম যে আমার হাতে যেহেতু সিগারেটের আগুন ছিল যার কারণে হয়তো আমাকে ভয় দেখাতে পারেনি কিন্তু আমি যদি তার পিছনে পিছনে ভাঙ্গা রাজবাড়ির ভিতরে চলে যেতাম তাহলে হয়তো একটা সময় আমি বড় ধরনের বিপদের সম্মুখীন হতাম ।
সেদিনের ঘটনার পর থেকে আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেছি যে দাদা এবং নানাদের কাছ থেকে যে গল্পগুলো শুনেছি সবগুলোই সত্য এবং এগুলো মানুষকে একাকী পেলে ভয় দেখায় বা তাদের দেখে মানুষ ভয় পায় এটা বাস্তব ঘটনা ।
এই ঘটনার পর থেকে আমি যখন দিনের বেলাও গোয়াল কান্দি রাজবাড়ির মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতাম তখনও আমার ওই রাতের কথা মনে হত এবং গা শিউরে উঠত যে আমি এমন একটি ঘটনার সাক্ষী হয়েছিলাম ।
প্রিয় বন্ধুরা আপনাদের কাছে যদি এমন বাস্তব কোনো গল্প ঘটনা থাকে কারো সাথে ঘটে গেছে এমন ঘটনা তাহলে অবশ্যই আমাদের ইমেইল করে জানাতে পারেন বা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন । সেই গল্পগুলো আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে পাবলিশ করে দেব ।
0 Comments