আমাদের এই ঘটনাটি শেয়ার করার কারণ । যেন এই ঘটনা থেকে আমাদের দেশের মা বোনেরা শিক্ষা নিতে পারে এবং তারা যেন এই ধরনের ভুলের ফাঁদে পা না দিয়ে নিজেদের সুখের সংসার নষ্ট না করে ।
আমরা সেই হতভাগা বোনটির কথা আমাদের সাথে ও হবহু শেয়ার করলাম:
আমি জীবনে যে ভুল টা করেছি । আমি চাইনা আমার কোন বোন আমার মত ভুল করে নিজেই নিজের সর্বনাশ করে একটা সুখের সংসার নষ্ট না করে । একটা ভুল সারা জীবনের কান্না সেটা আমি ভুল করার পরেই বুঝতে পারছি । আমার নাম সাথী আমার বয়স২১ বছর ।আমার দুই বছর আগে পারিবারিক ভাবেই ধুমধাম করে আমাদের উপজেলার একটা ছেলের সাথে বিবাহ হয় । আমার স্বামীর বয়স ছিল ২৭ বছর । আমার স্বামী ঢাকা শহরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন ।যার কারণে তিনি ঢাকাতেই থাকতেন । আর আমি শ্বশুর বাড়িতেই থাকতাম মাঝে মাঝে আমার মায়ের বাড়িতে থাকতাম ।
আমার স্বামীর পতি ২ মাস পর পর বাড়িতে আসতেন । আমাদের সুখের সংসার ছিল । আমরা বিবাহিত জীবনে সুখী ছিলাম । আমার স্বামীর চাচাতো একটা ভাই ছিল সম্পর্কে আমার দেবর ।ওই ছেলেটা মাঝেমাঝেই আমাকে বিভিন্ন ধরনের রোমান্টিক কথা বলে পটানোর চেষ্টা করত । আমার স্বামীও যেহতো দূরে থাকে ,নিজেকে একাকী লাগে যার কারণে দেবরের কথাই আমি মাঝেমাঝে রোমান্টিক হয়ে যেতাম ।
প্রথম প্রথম আমি দেবরের সাথে হাসিখুশি ভাবে কথা বলতাম । আমাদের মধ্যে খারাপ কোনো উদ্দেশ্য ছিল না । বন্ধর মতো তার সাথে কথা বললে মনের কষ্ট গুলো হাল্কা করতাম । বন্ধু হিসেবে তার সাথে আমি কথা বলা শুরু করি ।
এভাবে ২-৩ মাস যাওয়ার পরে একদিন দেবর আমাকে বলে । ভাবি তোমাকে মা ডেকেছে আমাদের বাড়িতে আসো একটু । আমি তার কথা শুনে বাড়ির কাজ সব শেষ করে তাঁর বাড়িতে চলে গেলাম ।যাওয়ার পরে দেখি আমার চাচা শাশুড়ি বাড়িতে নেই মানে ওই বাড়িতে আর কেউ নেই শুধু দেবর ছাড়া ।
আমি বললাম কি ব্যাপার কাউকে দেখছি না চাচী কেউ তো দেখছি না । তুমি বললে তোমার মা দেখা করতে ডেকেছে । তখন দেবর বলল আরে ভাবি মা তো পাশের বাড়ি গেছে এখানে আসবে তুমি রুমে এসে বসো ।
আমি তার কথা শুনে তার রুমে গিয়ে বসলাম ।দেবরের মনে খারাপ চিন্তা ভাবনা ছিল এটা আমি কখনোই বুঝতে পারিনি । সেদিন জোর করে আমার সাথে আমার দেবর শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে ।আমিও প্রথমে বাধা দিলেও পরে আর বাধা দিয়ে আটকাতে পারিনি । এই ঘটনার পরে দেবরের সাথে যেহেতু আমার একটি বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল এবং পরিবারের মান সম্মানের কথা চিন্তা করে আমি এই ঘটনাটি কারো সাথে শেয়ার করিনি ।
আমি ভেবেছিলাম এটা একটা দুর্ঘটনা ভেবে ভুলে যাবো। আর আমি কখনোই দেবরের সাথে কথা বলবো। কিন্তু আমি জানতাম না এই ঘটনার মাঝে কখন যে দেবর আমার ভিডিও করে রেখেছিল এটা আমি ভুল করেও বুঝতে পারিনি ।
আমি যখন দেবরের সাথে আর কথা বলিনা । তখন দেবর আমাকে একদিন কল দিয়ে বলে যে তোমার ভিডিও রয়েছে আমার কাছে তুমি যদি আমার সাথে কথা না বলো আমার ডাকে সাড়া না দাও তাহলে আমি কিন্তু সবাইকেই ভিডিওটি দেখে দিব । তখন আমি তার কথা শুনে ভয় পেয়ে যাই যদি সবাই জেনে যায় তাহলে তো আমার সুখের সংসার নষ্ট হয়ে যাবে । যার কারণে পরবর্তীতে তার ডাকে সাড়া দিতে বাধ্য হবে এবং সে আমার সাথে এভাবে ৭- ৮ দিন শারীরিক সম্পর্ক করে ।
এভাবেই চলছিল কিছু দিন । আমি যে একটা কষ্টের মধ্যে আছি এটা কাউকে বুঝতে দিইনি । এর মধ্যে হঠাৎ একদিন আমাদের স্বামীর গ্রামের আরেকটা ছেলে আমাকে বলছে ভাবি তুমি তো সেই জিনিস তোমার স্বামী ঢাকায় আছে আর তোমার দেবর তোমার সব কিছু পাচ্ছে । আমিও তো তোমার দেবর আমরা তো কিছু পাই । আমাদের একটু দিলে কি হয় ভাবি আমি সব জানি তুমি যদি আমার সাথে না আসো তাহলে আমি কিন্তু বলে দেবো সবাইকে ।
আমি তখন নিজের সম্মান এবং পরিবারের সম্মান বাঁচানোর জন্য আমি ঐ ছেলেটার সাথে গেলাম সেও আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করলো ।এর কিছুদিন পরে দেখি আবার অন্য একজন ওই ভাবে আমাকে বলছে যে ভাবি আমি কিন্তু সবকিছু জানি তুমি যদি আমার ডাকে সাড়া না দাও তাহলে কিন্তু আমি সবাইকে বলে দেবো ।
তখন আমি তার কথা শুনে ভয় পেয়ে গেলাম এবং ভয় পেয়ে ছেলেটার সাথে ও আমাকে বাধ্য হয়ে যেতে হলো । আমি তখন বিষয়টা নিয়ে ভাবলাম যে আসলে এমন কেন হচ্ছে সবাই আমাকে ভিডিওর ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করছে । তো তিন নাম্বার ওই ছেলেটাকে আমি অনেক কথার মাঝে জানার চেষ্টা করলাম যে আসলে সে কিভাবে এই ঘটনাটি জানতে পেরেছে । তখন সেই ছেলেটি বলল সর্বপ্রথম আমার সাথে যে দেবর টা ব্ল্যাকমেইল করেছিল ওর কাছ থেকেই নাকি তারা এই ঘটনাটি শুনেছে ।
এই ঘটনাটি ইতিমধ্যে গোপনে গোপনে অনেকেই জেনে ফেলেছে । একটা সময় আমার জামাই আমার শশুর শাশুড়িও জানতে পারে ।এই ঘটনা নিয়ে অনেক সমস্যা তৈরি হয় ।একটা সময় আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেন এবং সব দোষ আমার আমি নাকি সব পাড়ার ছেলেদের কে নষ্ট করেছি । আমার স্বামী নাকি দূরে থাকে যার কারণে আমি পাড়ার ছেলেদেরকে নষ্ট করেছি এই অপবাদ দেয়া হয়েছিল আমাকে । আমার কথা কেউ সেদিন বিশ্বাস করে নি যে আমাকে এভাবে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে আমার সাথে জোর করে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে আমার কথা কেউ সেদিন বিশ্বাস করেনি ।
আমার ভুলটা হয়েছিল প্রথম দিনেই । যেদিন আমার সাথে জোর করে সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছিল আমি সে দিন যদি চিৎকার করতাম বা ঘটনার পরে সবাইকে জানাতাম । তাহলে কিন্তু আমাকে এই ধরনের বিপদে পড়তে হতো না । আমি যেই সুখের সংসার ভেঙে যাওয়ার ভয় করে নিজেকে বিলিয়ে দিলাম কিন্তু শেষ রক্ষা হল না ওই ঘটনার কারণে আমাকে অপবাদ দিয়ে ডিভোর্স দেওয়া হলো ।
আর আমার মত কাউকে বিশ্বাস করবেন না সবাই কিন্তু বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে পারেনা । আমি আমার সব বোনদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যদি কারো সাথে এই ধরনের প্রতারণামূলক ঘটনা ঘটে সে ক্ষেত্রে আমার মত কেউ গোপন রাখবেন না সাথে সাথে প্রকাশ করে দেবেন । যত গোপন রাখবেন তত বিপদ বাড়তে থাকবে দিন দিন ।
0 Comments